নান্দনিক ভালোবাসার শহর
- তানভীর আহমেদ
পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর শহরগুলোই প্রেমপিয়াসী মানুষ পছন্দ করে ডেকে থাকেন রোমান্টিক সিটি। ভালোবাসার শহরগুলোকে বিভিন্ন মাত্রার মাপকাঠি দিয়ে মাপা হয়ে থাকে। কোনো শহর প্রাকৃতিকভাবে মনোমুঙ্কর, কোনোটির সভ্যতা নান্দনিকতার ছোঁয়ায় পরিপূর্ণ। কোনো শহরের কৃষ্টি-সভ্যতা রোমাঞ্চ জাগায়। সেই শহরগুলো নিয়েই:
প্যারিস (ফ্রান্স)
পৃথিবীর সবচেয়ে রোমান্টিক শহর কোনটি- এ প্রশ্নের জবাবে সবাই একবাক্যে মেনে নিয়েছে যে শহরটি তার নাম প্যারিস। ফ্রান্সের প্যারিস নগরীকে বলা হয় কৃষ্টি ও সংস্কৃতির এক অনন্য মিশেল। এ নগরীকে দেখে প্রেমে পড়েননি এমন মানুষ নেই। যারা একবার ফ্রান্সে বেড়াতে গেছেন আর পা পড়েনি প্যারিসে তা যেন হওয়ার নয়। পৃথিবীর সবচেয়ে রোমান্টিক শহরটির নাম তাই প্যারিস। প্যারিসের মতো গোছানো শহর খুব কমই রয়েছে। প্রতিবছর প্যারিস লাখো মানুষের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে। পর্যটকদের প্রিয় এই শহরটি নতুন প্রেমিক-প্রেমিকা যুগল ও নবদম্পতিদের সময় কাটানোর জন্য বিখ্যাত। আইফেল টাওয়ার ছাড়াও এ শহরের সবচেয়ে মনোমুঙ্কর বিষয় হলো এখানকার মেঘলা আবহাওয়া। পরিচ্ছন্ন ও স্বচ্ছ বাতাসে ঘুরে ফেরা মানুষের মনে মুহূর্তেই আনন্দের জোয়ার ওঠে এ শহরে এসে। এছাড়া বিভিন্ন দেশের নানান পদের খাবার, ফ্যাশনেবল সমাজ এবং নিরাপদে ঘুরে ফেরার জন্য এ শহরটি বিনাপ্রশ্নে ভালোবাসার শহর।
ভেনিস (ইতালি)
পৃথিবীর ভাসমান শহরের তালিকার শীর্ষে যে শহরের নাম উঠে আসে সেটি হলো ভেনিস। ইতালির এ শহরটির মতো নান্দনিক শহর পৃথিবীতে খুব কমই আছে। পুরো শহরটির বুক চিরে বয়ে গেছে স্বচ্ছ জলের প্রবাহ। পরিষ্কার জলের এই লেকগুলো এতটাই স্বচ্ছ যে, গা ঘেঁষে মাথা উঁচু করে থাকা দালানগুলোর প্রতিবিম্ব আর আকাশে ছুটে চলা মেঘ যেন নেমে এসেছে পানিতে। এ শহরে ঘুরে ফেরার জন্য রয়েছে বিশেষ ধরনের নৌকা। এসব নৌকায় আপনি দালানের ভিড়ে চলতে পারবেন একস্থান থেকে অন্যস্থানে। এ শহরে নেই কোনো কোলাহল, নেই যান্ত্রিক ব্যস্ততা। শুধু প্রশান্তি যেন বিছিয়ে আছে পুরো শহরটিতে। পর্যটকদের দারুণ পছন্দের এ শহরটি পদচারণায় মুখর থাকে বছরের বেশির ভাগ সময়। ক্যানেলগুলোর পাশে দাঁড়িয়ে থাকা দালানগুলোর নান্দনিক কারুকার্য এ শহরকে করেছে আরও মনোমুঙ্কর। শহরটিকে নিয়ে বলা হয়, এ শহরের সৌন্দর্যের রহস্য ভেদ করতে বেড়িয়ে দেখতে হবে নিজেকেই! প্রেমময় এমন শহর যেন দ্বিতীয়টি আর নেই।
লিসবন (পর্তুগাল)
পর্তুগালের লিসবন শহর। পৃথিবীর রোমান্টিক শহরগুলোর প্রথম সারির একটি। লিসবন শহরকে বলা হয় শিল্পী আর লেখকদের তীর্থভূমি। এ শহরে জমায়েত হন পৃথিবীর বিখ্যাত সব লেখক ও অভিনয় শিল্পী। নান্দনিক এ শহরটির নাম তাই ছড়িয়েছে বিশ্বব্যাপী। প্রাকৃতিকভাবে সৌন্দর্যমণ্ডিত এই শহর চোখ জুড়িয়ে দেয় পর্যটকদের। এ শহরের চারপাশ দেখলে অনেকেই ভাববেন এ যেন কোনো চিত্রশিল্পীর মনের মাধুরী মিশিয়ে অাঁকা কোনো নগরী। এত সুন্দর শহর পৃথিবীতে খুব কমই আছে। পরিষ্কার বাতাস, নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়া আর নিরাপদ শহর এটি। এখানকার রাস্তাগুলোতে হেঁটে ফিরলে নজর কাড়তে রাস্তার দুধারে সীমান্ত বিস্তৃত প্রাকৃতিক রূপলাবণ্য। প্রাকৃতিক দৃশ্যের এমন লোভনীয় সম্ভার কোনো দেশেই নেই। এই শহরের লাবণ্য দেখে, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখে অনেকেই বলে থাকেন লিসবন গুপ্তরহস্যের শহর। এ শহরের সৌন্দর্য দেখে শেষ করা যাবে না। প্রতিদিনই এ শহর যেন সেজে ওঠে অনন্য রূপে। পৃথিবীর রোমান্টিক শহর হিসেবে লিসবন অপরূপ।
লন্ডন (ইংল্যান্ড)
ইংল্যান্ডের মুকুট বলা হয় লন্ডন শহরটিকে। এ শহরটিও বেশ গোছানো ও পরিকল্পনামাফিক গড়ে ওঠার কারণে শহরের পরিবেশ পৃথিবীর রোমান্টিক সিটি হিসেবে গণ্য করেছে। পৃথিবীর বসবাসযোগ্য, সুস্থ নগরী হিসেবে লন্ডনের তুলনা লন্ডনই হতে পারে। সুপ্রশস্ত রাস্তা, সুন্দর বসবাসের বাড়ি, আইনশৃঙ্খলার নির্ভরযোগ্য পরিবেশ সব মিলিয়ে লন্ডন হয়ে উঠেছে বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর মেট্রোপলিটন সিটি। নাগরিক কোলাহল থাকলেও এ শহর নিরাপদ ও স্বস্তিদায়ক মনে করেন প্রেমপিয়াসীরা। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ এ শহরে এসে ভিড় করেন সুস্থ ও স্বাচ্ছন্দ্যে সময় কাটানোর জন্য। সবুজে ঢাকা নগরী লন্ডনে রয়েছে আধুনিকতার সর্বোচ্চ ছোঁয়া। এখানকার নাইটক্লাবগুলো জমে ওঠে রাতের বেলা। রেস্টুরেন্টগুলোতে পাওয়া যায় বিভিন্ন সংস্কৃতির সুস্বাদু ও বিখ্যাত খাবার। রাতের বেলা ঘুমুনোর জন্য রয়েছে আরামদায়ক আবাসন। ভোর ভাঙলে পরিচ্ছন্ন আকাশ ও স্বচ্ছ আবহাওয়া মনপ্রাণকে সতেজ করে তুলবে। সব মিলিয়ে লন্ডন এ সময়ের অন্যতম ভালোবাসার শহর।
Source: http://www.bdpratidin.com/
No comments:
Post a Comment